সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে আ. মতিন সরকার
বছরের এ সময় খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, নদী-নালাসহ নিচু জলাশয় পানিতে টইটুম্বর হয়ে থাকার কথা। চলতি বছরের চিত্র ভিন্ন, আষাঢ় পেরিয়ে শ্রবণ তবুও নেই পানি। জুন হতে জুলাইয়ের মধ্যে আমন ধানের চারা রোপণের উত্তম সময়। পানির অভাবে আমন ধানের চারা রোপণ দেরি হচ্ছে। অনেক কৃষক সেচ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করে আমন চাষাবাদ শুরু করেছেন। এতে করে ব্যয় বাড়ছে এবং ফলন কমসহ লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
শান্তিরাম গ্রামের কৃষক পলাশ চন্দ্র মহন্ত বলেন, বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা না করে, অবশেষে সেচ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করে আমন চারা রোপণ শুরু করেছি। এতে করে অনেক ব্যয় বাড়বে। যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে বোরো ধানের আদলে পানি দিতে হবে। তিনি বলেন, সাধারণভাবে এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে কাটামাড়াই পর্যন্ত ৬ হতে ৭ হাজার টাকা খরচ হবে। ভাল ফলন হলে বিঘাতে ১৫ হতে ১৬ মণ ধান হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১২০০ হতে ১৪০০ টাকা। তিনি মনে করেন, যদি আমন খেতে নিয়মিত সেচ দেয়া লাগে তাহলে বিঘা প্রতি ২০০০ টাকা খরচ বাড়বে। এতে করে কৃষকদের লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একই কথা বলেন, চন্ডিপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মতিন মিয়া। তিনি বলেন, বৃষ্টি হচ্ছে আমন চাষাবাদের প্রাণ। বৃষ্টির পানি ছাড়া আমনের ফলন ভাল হবে না। খেতে পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যাবে। এছাড়া আগাছা বেশি হবে।
গত ১৫দিন ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ওপর দিয়ে হালকা বৃষ্টি পাত হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বীজতলায় চারার বয়স হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে কোনো কূল-কিনারা না পেয়ে কৃষকরা সেচের মাধ্যমে চারা রোপণ শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৮৫ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়া চলতে থাকলে চাষাবাদ ব্যাহত হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির বলেন, এটি প্রাকৃতিক দুর্য়োগ। এখানে আসলে মানুষের কোনো হাত নেই। সেচের মাধ্যমে কৃষকদের আমন চারা রোপনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় বাড়লেও করার কিছু নেই। এ কারনে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
